‘মা’ আনিসুল হকের এক অনবদ্য সৃষ্টি

'মা' আনিসুল হকের এক অনবদ্য সৃষ্টি


মা” আনিসুল হকের অনবদ্য এক সৃষ্টি।
উপন্যাসটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজাদের সত্যি ঘটনার উপর লিখিত। যদিও লেখক সত্যি ঘটনার সাথে সাথে কিছুটা কল্পনা মিশ্রিত করে আরো রোমাঞ্চকর করে তুলেছেন। ‘মা’ উপন্যাস টি পড়ে আবেগাপ্লুত হয় নি এমন একজনকেও হয়ত পাওয়া যাবে না। একজন মুক্তিযোদ্ধার শহীদ হওয়ার করুণ কাহিনী এবং একজন মায়ের অপেক্ষা ও পুত্র হারানো আহাজারি আমাদের হৃদয়কে নাড়া দিয়ে যায়।
উপন্যাসে শহীদ আজাদের মৃত্যুর নির্মমতাকে ছাপিয়ে গেছে একজন মায়ের সন্তান হারানো আহাজারি, এদিক দিয়ে উপন্যাসের নামকরণ সার্থক।
আজাদ এর মা দীর্ঘ ১৪ বছর ভাত খান নি, একবেলা রুটি খেয়ে ছিলেন।
শুধু তার ছেলে জেলখানায় তার সাথে সাক্ষাতে বলেছিল “মা অনেকদিন ভাত খাই না, ভাত খেতে ইচ্ছা করছে, তুমি আমার জন্য ভাত নিয়ে এস”। আজাদের মা আর কখনো ছেলেকে ভাত খাওয়াতে পারেন নি।

আজাদের মা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো বিছানায় শোন নি, কারণ তিনি শেষ বার তার ছেলেকে জেলখানার মেঝেতে থাকতে দেখেছিলেন।

ছেলের শরীরে শুকিয়ে যাওয়া রক্ত, ফোলা ক্ষত বিক্ষত শরীর দেখে আজাদের মা বিচলিত হয়েছিলেন, কষ্টে তার বুক ফেটে গিয়েছিল তবুও তিনি ছেলেকে বলেছিলেন যতই অত্যাচার করুক শক্ত হয়ে থাকতে, সহযোদ্ধাদের নাম মুখে আনতে বারণ করেছিলেন পাক হানাদার বাহিনীর সামনে।
ফলস্বরূপ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সুধু ছেলের জন্য অপেক্ষাই করে গেছেন, কখনো জানতেও পারেন নি ছেলে মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে, মারা গেলেও তার লাস কোথাও। দীর্ঘ ১৪ বছর অপেক্ষার পর মৃত্যুর আগে তিনি বলে গেলেন তার কবরের ফলকে যেন লেখা হয় শহীদ আজাদের মা।

এমন হাজারো মায়ের আত্মত্যাগ, বুকের ভারী নিশ্বাস, আর সন্তান হারানো আহাজারিতে ভরে আছে বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *