নারীরাও মানুষ

Photo by Taya Iv on Unsplash

সামনের বাসার লোকটা তার বউ টাকে পিটাচ্ছে টাকা এনে দিতে নাহলে সে আবার বিয়ে করবে।
মহিলাটা এসে কাঁদছে আর বলছে “আজকে যদি পড়াশোনা করতাম সমাজে একটা অবস্থান থাকতো এই দিন দেখা লাগতো না। বাচ্চা গুলা নিয়ে চলে যেতাম একবেলা না খেয়ে থাকলেও অন্তত এমন লম্পট জামাইয়ের মার খেয়ে পড়ে থাকা লাগতো না।”

অনেকেই আজকাল দেখি নারীবাদী দের ক্যান্সার বলেন।
আমি কোন বাদীই নই, আর কোন ধরনের বাড়াবাড়িও সমর্থন করি না।
কিন্তু সেই সুশীল সমাজের প্রতি একটাই বক্তব্য,
নারীবাদীরা ক্যান্সার হলে নারীবিদ্বেষীরা হলো সেই ক্যান্সারের জীবাণু।
নারীবাদী সমাজ আসে কই থেকে জানেন?
পুরুষের এই ধরনের আচরণ থেকে।
আপনারা বলেন,
বাড়িতে স্বামীকে চা বানায়ে খাওয়ালে সেটা দাসত্ব আর অফিসে বসকে খাওয়ালে সেটা কাজ।
স্বামী যদি সারাদিন বাহিরে থেকে কষ্ট করে আসে স্ত্রী তো সারাদিন বাসায় বসে আরাম করে না..
সামান্য সহোযোগিতা করেন না কেন তাহলে?
কিসের এতো ইগো? পুরুষ তাই?
উমম.. লিঙ্গের ভিত্তিতে উপরে উঠে গেলেন?
আচ্ছা যাইহোক।
স্বামী কে চা সার্ভ করায় আমি জানিনা কবে কোন নারী দাসত্ব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে যেই উল্লেখ করেন না কেন ব্যপারটা ভুল।
আবার বসকে চা সার্ভ করা নিয়েও যাদের মাথাব্যথা এবং দাসত্বের তুলনা করছেন সেটাও ভুল।
দাসত্ব বলতে মানসিক দাসত্ব আছে আবার বাহ্যিক দাসত্ব আছে।
মানুষের সাইকোলজিক্যাল শিক্ষাই এমন হয়ে গেছে যে পুরুষ ডিমান্ডিং হবে ডমিনেন্ট হবে। আর এমন শিক্ষা ছোট থেকেই দেওয়া হয়ে থাকে।
মেয়েদের শিখায় খাপ খাওয়াতে আর ছেলেদের শিখানো হয় যা চাইবে তা পাবে টাইপ।

এখন আজকে যদি মহিলা টার একটা ইনকাম সোর্স থাকতো লোকটা এমন করার সাহস পেতো?
মহিলা টার এই অর্ধ-বয়সে লোকটা ছেড়ে দিলে কি হবে ভাবা লাগতো?
নাকি জানোয়ার এর মতো মার খেয়ে সংসারে কোন ভালোবাসা না পেয়েও বাধ্য হয়ে পরে থাকা লাগতো?

আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে। কিন্তু এখনো কিছু কাঠমোল্লা আছে যারা নিচে টেনে ধরবেই ধরবে। কম বয়সে, পড়াশোনা না করায়ে, কোনমতে বিয়ে দিয়ে ফরজ কাজ আদায় সম্ভব।
কিন্তু এরপরে স্বামীর ঘরে তার সাথে কি হতে পারে ভেবে দেখবেন।
মেয়েরাও মানুষ।
আপনাদের যেমন সেল্ফ রেসপেক্ট থাকে আমাদেরও আছে।
আপনারা যেমন সাবমেসিভ থাকা পছন্দ করেন না তেমনি যেসব মেয়েদের সামান্যতম বিবেকবুদ্ধি আছে বা যারা এখনো ধর্মের অতিরঞ্জন করে মানসিক দাসত্ব গ্রহণ করে নেয়নি তারাও পছন্দ করে না।
এই লেখার পরে আমাকে কাফের নাস্তিক বহুত কথাই বলতে পারেন।
বা হয়তো বলবেনও।
আমার তাতে বিন্দুমাত্র কিছু যায় আসে না।
কিন্তু আমার এই সামান্য লিখায় যদি আপনাদের জং পরা তালাবদ্ধ বিবেকে যদি সামান্য একটুও আঘাত আসে এবং অন্তত আপনার ঘরে থাকা বউ কে কিংবা বোন টাকে কিংবা মাকে মানুষের মর্যাদা দিতে মনে আনতে সাহায্য করে তাহলে আমি সার্থক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *